শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও নয়টি মামলা, হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ

আইনি চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়ে আজ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও নয়টি মামলা দায়ের করা হয়েছে, যা তাকে মোকাবিলা করতে হওয়া মামলার সংখ্যা ৩১-এ পৌঁছেছে। এই নতুন মামলাগুলোতে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ। এই মামলাগুলোর একটি ২০১৩ সালের ৫ মে মMotijheel-এর শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে সহিংস দমন অভিযানের সঙ্গে সম্পর্কিত। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (ICT) আজ দায়ের করা অভিযোগে শেখ হাসিনা এবং আরও ২৩ জনের বিরুদ্ধে এই অভিযানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। আইসিটি মামলার পাশাপাশি, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও আটটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে, যা সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সংঘটিত মৃত্যুর সঙ্গে সম্পর্কিত। এই আন্দোলন এক পর্যায়ে গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হয় এবং ৫ আগস্ট হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করে। এই নতুন মামলাগুলোর মধ্যে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং বোন শেখ রেহানাকেও সহ-অভিযুক্ত করা হয়েছে, যা তাদের প্রথমবারের মতো হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করেছে। **আইসিটি মামলার বিবরণ** আইসিটি মামলা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী এমএইচ তামিম হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব (শিক্ষা ও আইন) মুফতি হারুন ইজহার চৌধুরীর পক্ষে দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, হাসিনা এবং অন্যান্যরা একটি নির্মম দমন অভিযান চালিয়ে ৫-৬ মে ২০১৩ তারিখে ঢাকাসহ অন্যান্য অঞ্চলে হেফাজত কর্মীদের গণহত্যা করেছেন। তদন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে, এবং যদি প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে ট্রাইব্যুনাল সকল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করবে। আইসিটি মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছে সাবেক সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি, যার মধ্যে আছেন ওবায়দুল কাদের, রাশেদ খান মেনন, এবং শেখ ফজলে নূর তাপসসহ প্রাক্তন মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং উচ্চপদস্থ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা। **অতিরিক্ত হত্যা মামলা** আজ দায়ের করা অন্যান্য মামলা শেখ হাসিনার সরকারের শেষ দিনগুলিতে বিক্ষোভকারী এবং সাধারণ জনগণের ওপর সহিংস দমন অভিযানের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে। এসবের মধ্যে রয়েছে জাত্রাবাড়ীতে হানিফ ফ্লাইওভার টোল প্লাজায় ফল বিক্রেতা ফরিদ শেখের মৃত্যু এবং কবি নজরুল সরকারি কলেজের ছাত্র মো. ওমর ফারুকের মৃত্যু। শিকারদের পরিবার ঢাকাসহ সাভার, নারায়ণগঞ্জ, রংপুর, জয়পুরহাট এবং বগুড়া জেলায় এই মামলাগুলো দায়ের করেছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে স্থানীয় আদালত পুলিশকে এসব অভিযোগকে এফআইআর হিসাবে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে, যা আনুষ্ঠানিক তদন্তের সূচনা নির্দেশ করে। আইনি কার্যক্রম এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে চাপ বাড়ছে, যাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দমন করার জন্য সহিংসতার অভিযোগ উঠেছে। এই মামলাগুলোর ফলাফল বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে।